দেশের পটপরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশ থেকে পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেওয়ার পর এবার একটি সিনেমা থেকে বাদ পড়লেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। ‘মীর জাফর চ্যাপ্টার টু’ নামে যৌথ প্রযোজনার একটি সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকার কথা ছিল তার।
তবে সিনেমাটি থেকে ফেরদৌসকে বাদ দেওয়ার কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ‘মীর জাফর চ্যাপ্টার টু’-এর ভারত অংশের প্রযোজক রানা সরকার। বাংলাদেশের সঙ্গে মিলে তিনি সিনেমাটি তৈরি করবেন। শুটিং শুরু হবে এ বছরই। তার আগেই ছেটে ফেলা হলো ফেরদৌসকে।
কিন্তু কেন বাদ পড়লেন এই নায়ক?
এ প্রসঙ্গে ওপার বাংলার প্রযোজক রানা সরকার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের, বিশেষত ছাত্রদের আবেগের কথা মাথায় রেখে আমার কোনো সিনেমায় বাংলাদেশি এমন কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে অভিনয় করাব না, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন না। সে হিসেবে ফেরদৌসকে আমরা বাদ দিয়েছি।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে দমাতে গত ১৬ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ দিয়ে গুলিবর্ষণ শুরু করে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় আওয়ামী-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও। এতে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষার্থী-জনতা-সাংবাদিক এবং শিশুসহ হাজারো মানুষ মারা যায়। আহত হয় হাজার হাজার। আটক করা হয় অসংখ্য মানুষকে।
আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য হওয়ায় হাসিনা সরকারের এই গণহত্যা এবং দমন-পীড়ন দেখেও চুপ ছিলেন নায়ক ফেরদৌস। এত মানুষের প্রাণহানি তাকে কষ্ট না দিলেও বাংলাদেশ টেলিভিশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনি নিন্দা জানান এবং জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন। ফেরদৌসের এহেন ভূমিকা অবাক করে গোটা দেশকে।
এরপর গত ৫ আগস্ট লাখ লাখ ছাত্র-জনতার অসহযোগ আন্দোলনের মুখে টিকতে না পেরে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তারপর থেকে লাপাত্তা ছিলেন ফেরদৌসও। পরে জানা যায়, তিনিও পালিয়ে গিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছেন। এখনো সেখানেই রয়েছেন।
এদিকে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করায় ফেরদৌস প্রথমবার সংসদ সদস্য (ঢাকা-১০ আসন) হয়েও সাত মাসেই শেষ হয়ে যায় সেই মেয়াদ। তারই মধ্যে একটি ইতিহাসনির্ভর সিনেমা থেকে বাদ পড়া এই অভিনেতার জন্য যেন ‘মরার উপরে খাড়ার ঘাঁ’।
প্রযোজক রানা সরকার জানিয়েছেন, ফেরদৌসের বদলে তারা আরেক চিত্রনায়ক জিয়াউল ফারুক রোশানকে নিয়ে সিনেমাটির কাজ শুরু করবেন, যদি তিনি রাজি হন। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার এ সিনেমার শুটিং হবে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। সরকারিভাবে অনুমতি পেলেই শুরু হবে শুটিং।
(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/এজে)

