চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টের রাস্তা থেকে কাটা পাহাড় পর্যন্ত চবির চারুকলা শিক্ষার্থীদের আঁকা আলপনা নষ্ট করে একাকার ও কনকর্ড বগির চিহ্ন এঁকেছে কে বা কারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য একটি চক্র চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে সন্দেহ শিক্ষার্থীদের। তাদের সন্দেহের তীর ছাত্রলীগের দিকে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চারুকলার শিক্ষার্থীরা রঙতুলির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন প্রতিবাদ, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও দেশপ্রেম। শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে এই দেশ সবার। কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই নেই দেশে। কিন্তু আলপনার মাঝখানে কোনো স্বৈরাচারের দালাল ওভাররাইটিং করে ‘একাকার’ ও ‘কনকর্ড’
বগির চিহ্ন এঁকে দিয়েছে। এতে আলপনার সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে।
কে বা কারা আলপনার এই সৌন্দর্যহানি করেছে, তার সঠিক প্রমাণ এখনো পাননি বলে জানান চারুকলার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিনা ইয়াসমিন প্রমি।
তবে প্রমি বলেন, ‘এখানে দেখা যাচ্ছে একাকার নামের একটা বগির নাম লেখা। যেটা আমরা জানি লীগের একটা দলের নাম ছিল। এছাড়া আমাদের আলপনায় কনকর্ড BM এগুলোও লেখা ছিল। আমার যেটা মনে হয় এখানে ভিন্ন কোনো পক্ষের একটা ষড়যন্ত্রও হতে পারে।’
প্রমি আরও বলেন, ‘একটা দল যখন লিখতে আসবে সব জায়গায় তাদের নামই লিখে যাবে। এতগুলো বগির নাম যেহেতু লেখা, আমাদের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতেই হয়তো একটা পক্ষ চক্রান্ত করছে।’
নিজেকে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে উল্লেখ করে প্রমি বলেন, ‘সাধারণের মতোই কাজ করেছি এবং করে যাব। এটা যে বা যারাই করেছে নিন্দনীয় একটা কাজ। তাদের এসব নোংরামির বহিঃপ্রকাশ তারা অন্য ভাবেও করতে পারত। শিল্পকর্মের উপরে এসব করে তারা নিজেদের নিচু মন–মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে।’ এসব কারা করেছে তা সিসি টিভি ফুটেজ ও অন্যান্যভাবে বের করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. জাহিদ হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য কয়েক দিন ধরে একটি চক্র চেষ্টা করে যাচ্ছিল। আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও এখন তারা অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থী দাবি করে অন্যদের সাথে মিশে গেছে। এই সুযোগেই তারা এই ঘৃণিত কাজটি করে।’
চবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলেও স্বৈরাচারদের পরিপূর্ণভাবে দমন করা হয়নি। তারা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে চলছে। চবির কাটা পাহাড়ের শিল্পকর্মের উপরে যারা ওভাররাইটিং করেছে তারা নিজেদের নিচু মন–মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/মোআ

