দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্বাসুজজামানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২টায় হাবিপ্রবি স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত ৭ বছর যাবত স্যার আমাদেরকে সকল শিক্ষা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন৷ হয়েছে ঠিক মতো ক্লাস, না হয়েছে আমাদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। শুধু তাই নয়, অন্যান্য স্কুলগুলো প্রতি বছরই তাদের শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা সফরে নিয়ে গেলেও বিগত ৭ বছরে আমাদেরকে কোনো শিক্ষা সফরে নিয়ে যাওয়া হয়নি। এমনকি কেউ যদি স্কুল থেকে ট্রান্সফার নিয়ে অন্য কোনো স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য ট্রান্সফার সার্টিফিকেট তুলতে চায় তাহলে স্যার আমাদের কাছে টাকা দাবি করে বসেন৷ স্যার স্কুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময় না মেনে তার ইচ্ছা মতো সময়ে আসেন।
এছাড়াও শিক্ষক সংকট থাকলেও তিনি শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো গণিত বিষয়ের শিক্ষককে ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ে ক্লাস নিতে পাঠান। তিনি ইংরেজি শিক্ষককে পাঠান বাংলা ক্লাস নেওয়ার জন্য, শুধু তাই নয় কেমিস্ট্রির শিক্ষক ক্লাসে এসে এক দিনে একটি অধ্যায় শেষ করে দিয়ে যান।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমাদের স্কুলের কিছু সংখ্যক শিক্ষককে বিগত চার বছর থেকে এক টাকাও বেতন দেওয়া হয় না। তাই আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি শিক্ষকদের ন্যায্য বেতন বুঝিয়ে দিয়ে আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে উনি সরে দাঁড়াবেন।
বেতন না পাওয়ার বিষয়ে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকরা বলেন, গত ৪৩ মাস তারা বেতন পান না। প্রায় সাত বছর যাবৎ কোনো ভাতাও পান না। শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হয় না। নির্বাচিত হওয়ার পরও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বাঁধা দেন প্রধান শিক্ষক আব্বাসুজ্জামান।
এছাড়া এমপিওভুক্তকরণে খামখেয়ালি, বেতন উচ্চতর স্কেলকরণে ৮ বছর দেরি করা, অন্যদের দায়িত্ব না দিয়ে সকল কাজ নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী করা, কোনো অর্থ কমিটি গঠন না করা, রশীদ ছাড়া টাকা খরচ করা, নাস্তা না দিয়ে তার বিল করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
এমনকি প্রধান শিক্ষক আব্বাসুজ্জামান নিজের জন্য আলাদা বিল করেন। অর্থ বরাদ্দ থাকার পরেও প্রোভিডেন্ট ফান্ড গঠন না করে ওই টাকা আত্মসাত করা এবং অডিট টিমকে নিজের কব্জায় নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এক সপ্তাহ সময় চায়। অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো সমাধান না পেলে আরও বড় পরিসরে আন্দোলনের হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা।
(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/এসআইএস)

