প্রায় ছয় বছর পর সরকারি ও অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের আউটসোর্সিং কর্মীদের মাসিক বেতন নূন্যতম ৫৭০ ও সর্বোচ্চ এক হাজার ১০২ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রে বিদ্যমান পাঁচ ক্যাটাগরির সঙ্গে আরও তিন ক্যাটাগরি যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি অফিসে প্রায় ৬০ হাজার ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে আরও ১০ হাজার আউটসোর্সিং কর্মী আছেন।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, আউটসোর্সিং করা জনবল বছরে দুটি উৎসব ভাতা, একটি নববর্ষ ভাতা ও প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক ছুটি নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
নারীরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। সবাইকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার কথাও বলা হয়েছে।
স্থানভেদে তিন ধরনের বেতন কাঠামো আছে। সর্বোচ্চ বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা মহানগর এলাকায় কর্মরতদের জন্য।
ঢাকা মহানগরীতে ক্যাটাগরি-১ কর্মীদের বেতন এখন ২০ হাজার ২১২ টাকা। আগে ছিল ১৯ হাজার ১১০ টাকা। এই ক্যাটাগরিতে আছেন ড্রাইভার (ভারী যানবাহন), সুপারভাইজার, কেয়ারটেকার, ওয়ার্ড মাস্টার, ইলেকট্রিশিয়ান, এসি মেকানিক, পাম্প মেকানিক, জেনারেটর মেকানিক, লিফট মেকানিক ও টেকনিশিয়ান।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মরত একই ক্যাটাগরির কর্মীরা প্রতি মাসে ১৮ হাজার ১২০ টাকার পরিবর্তে ১৯ হাজার ৮০ টাকা করে পাবেন।
এসব শহরের বাইরে একই ক্যাটাগরির আউটসোর্সিং কর্মীরা ১৭ হাজার ৬৩০ টাকার পরিবর্তে ১৮ হাজার ৫১৪ টাকা পাবেন।
ক্যাটাগরি-২ এ থাকা চালক (হালকা বাহন), স্যানিটারি মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, পাম্প অপারেটর, জেনারেটর অপারেটর ও মিটার রিডার পদে ঢাকা মহানগরী এলাকার কর্মীরা ১৯ হাজার ৬৩৬ টাকা করে পাবেন।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভার একই ক্যাটাগরির কর্মীরা ১৭ হাজার ৬২০ টাকার পরিবর্তে পাবেন ১৮ হাজার ৫৪০ টাকা।
অন্যান্য এলাকার কর্মীরা এখন ১৭ হাজার ৯৯২ টাকা বেতন পাবেন। আগে তা ছিল ১৭ হাজার ১৩০ টাকা।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ক্যাটাগরি-৩ এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিন মেকানিক, টেইলার্স ও ডুবুরিদের কর্মরতদের বেতন ১৮ হাজার ২১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৯ হাজার ২৩৬ টাকা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মরত একই ক্যাটাগরির কর্মীদের বেতন ১৭ হাজার ২২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮ হাজার ১৬৫ টাকা করা হয়েছে।
এসব শহর ছাড়া ক্যাটাগরি-৩ এর কর্মীরা বেতন পাবেন ১৭ হাজার ৬৩০ টাকা।
ক্যাটাগরি-৪ এর লন্ড্রি অপারেটর, সহকারী ইলেকট্রিশিয়ান, কুক, মালি ও অভিজ্ঞ কর্মীদের বেতন হবে ১৮ হাজার ৬৬০ টাকা।
এই ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মরত কর্মীরা ১৬ হাজার ৯২০ টাকার পরিবর্তে ১৭ হাজার ৬২৫ টাকা পাবেন।
এসব শহর ছাড়া এই ক্যাটাগরির কর্মীদের বেতন হবে ১৭ হাজার ১০৮ টাকা। আগে ছিল ১৬ হাজার ৪৩০ টাকা।
ক্যাটাগরি-৫ এর নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ইলেকট্রিক হেলপার, কাঠমিস্ত্রি, স্যানিটারি হেলপার, পাম্প হেলপার ও লিফটম্যানের ক্ষেত্রে নতুন বেতন হবে ১৮ হাজার ১৮০ টাকা।
একই ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মীরা ১৬ হাজার ৬২০ টাকার পরিবর্তে ১৭ হাজার ১৭৫ টাকা পাবেন।
অন্যান্য শহরে ক্যাটাগরি-৫ এর কর্মীদের বেতন হবে ১৬ হাজার ৬৭৩ টাকা।
সরকার বিশেষায়িত পরিষেবা সরবরাহকারীদের জন্য তিনটি বিশেষ বিভাগ চালু করেছে।
প্রথম বিশেষ ক্যাটাগরির জন্য ঢাকা মহানগর এলাকায় সমাজবিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস প্রোভাইডার, ট্রেইনার, গবেষক, ম্যানেজারিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার ও আইটি সার্ভিস প্রোভাইডারদের বেতন হবে ৪২ হাজার ৯৭৮ টাকা।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মরত একই বিশেষ ক্যাটাগরির কর্মীদের জন্য বেতন হবে ৪০ হাজার ৩০২ টাকা। অন্য শহরে যারা কাজ করেন তাদের বেতন হবে ৩৮ হাজার ৯৬৪ টাকা।
দ্বিতীয় বিশেষ ক্যাটাগরির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস প্রোভাইডার (ডিপ্লোমা), অ্যাসোসিয়েট ট্রেইনার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনসপেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার, ফোরম্যান ও টেকনিশিয়ান পদে কর্মীদের বেতন হবে ২৮ হাজার ৩৬৯ টাকা।
একই ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মীরা ২৬ হাজার ৬৩৬ টাকা করে পাবেন। অন্য শহরের কর্মীরা পাবেন ২৫ হাজার ৭৬৯ টাকা।
তৃতীয় বিশেষ ক্যাটাগরির সহকারী প্রশিক্ষক ও সহকারী টেকনিশিয়ারা ঢাকা মহানগর এলাকায় বেতন পাবেন ২২ হাজার ৫৯৮ টাকা।
এই বিশেষ ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার পৌরসভায় কর্মীরা ২১ হাজার ২৭৯ টাকা ও অন্যান্য শহরের কর্মীরা ২০ হাজার ৬২০ টাকা করে পাবেন।
নতুন নির্দেশিকা অনুসারে—আউটসোর্সিং করা কর্মীরা প্রতি বছরে ১৫ দিন করে ছুটি পাবেন। নারীরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন ৪৫ দিন।
তারা প্রত্যেকে দুটি উৎসব ভাতা পাবেন। এটি তাদের মাসিক বেতনের ৫০ শতাংশ। নববর্ষ ভাতা হবে তাদের মাসিক বেতনের ২০ শতাংশের সমান।