আগামী সপ্তাহেই ৩৮ এ পা দেবেন লিওনেল মেসি। কিন্তু এখনও দলের প্রাণভোমরা এই তারকা। তার নৈপুণ্যেই পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোকে হারিয়ে নকআউট পর্বের আশা জিইয়ে রেখেছে ইন্টার মায়ামি। এই বয়সেও মেসির জয়ের তীব্র আকাঙ্ক্ষা অবাক করেছে মায়ামির কোচ হ্যাভিয়ের মাশচেরানোকে।
বৃহস্পতিবার আটলান্টার মেরসিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচে পোর্তোকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে মায়ামি। দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে গোল করে ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স উপহার দেন মেসি।
মাশচেরানো বলেন, মেসির অসাধারণ ফুটবল গুণের চেয়ে তার প্রতিযোগিতার তীব্রতা তাকে আরও বেশি বিস্মিত করেছে। এই কোচের ভাষায়, ‘গোলের বাইরে… সে এমন এক খেলোয়াড় যে আমাদের দেখায় কীভাবে প্রতিযোগিতা করতে হয়, তার ক্ষুধা, জয়ের তীব্র ইচ্ছা যেকোনো স্তরে খেলার ক্ষেত্রেই হোক না কেন।’
‘ফুটবল দিক থেকে আর কী বলার আছে? সে এই খেলার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে তার জয়ের ইচ্ছাশক্তি। আজও শেষ মিনিটগুলোতে ক্লান্ত ছিল, চোট পেয়েছিল, তবু সে যেভাবে পেরেছে দলকে সাহায্য করে গেছে—আক্রমণে, রক্ষণে, শুধু যেন ফলটা পাওয়া যায়… আমরা জানি, ও আমাদের জন্য বড় সুবিধা নিয়ে আসে, তবে তার চেয়ে বড় হলো তার সংক্রামক জয়ের মানসিকতা, যে বিজয়ী মানসিকতা তার মধ্যে আছে,’ যোগ করেন মাশচেরানো।
অনেকেই ভেবেছিল পোর্তো সহজেই ইন্টার মায়ামিকে হারাবে। কিন্তু এই জয়ে মায়ামি ইতিহাস গড়েছে। এমএলএসের কোন দলের কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ইউরোপীয় দলের বিরুদ্ধে প্রথম জয় এবং এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে প্রথম বড় চমক।
মাশচেরানো আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে ফুটবলে অবশ্যই এক ধরনের শ্রেণিবিন্যাস থাকে, আর আমরা এমন এক দলের মুখোমুখি হয়েছিলাম যারা আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়ে ভরা। কিন্তু আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে আমরা যদি আমাদের কাজটা করি, পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলি, একে অন্যকে সমর্থন করি, একসাথে থাকি, আর সবচেয়ে বড় কথা হলো সাহস করে খেলি—তাহলে আমরা লড়াই করতে পারব।’
প্রথমার্ধে পোর্তোর সামু আগেহোয়া পেনাল্টি থেকে গোল করলেও বিরতির পর তেলাসকো সেগোভিয়া ও মেসির গোলে ইন্টার মায়ামি জয় নিশ্চিত করে, যা গ্রুপে পালমেইরাসের সমান চার পয়েন্টে পৌঁছে দিয়েছে দলকে।
‘হাফটাইমে আমি ছেলেদের যা বলেছিলাম, তা হলো… নিজেদের মনোবল বাড়াতে, কারণ আমরা স্পষ্টভাবে দেখিয়েছিলাম যে আমরা প্রতিযোগিতা করতে পারি, আর তখন আমি ফলাফলের চেয়ে বেশি কিছু ভাবিনি। আমার আসল আগ্রহ ছিল ছেলেরা যেন দেখায় যে তারা বলের সাথে এবং বল ছাড়াই খেলতে সক্ষম। ওরা বুঝেছিল, নিজেদের ঘুরে দাঁড় করিয়েছিল, আর শেষ পর্যন্ত এটা আমাদের জন্য দারুণ এক বিকেল হয়ে উঠেছিল,’ বলেন মাশচেরানো।