উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তার সুযোগের সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে কয়েকশত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা প্রতিবাদ জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে দেখা করেন।
পরে কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের কাছে তাদের দাবি পেশ করেন।
বর্তমানে দেশে ২৬টি ক্যাডার সার্ভিস আছে। এসব সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে উপসচিব পদোন্নতির সময় ৭৫ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা এবং ২৫ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পদোন্নতির এই হার ৫০:৫০ করার জন্য সুপারিশ করা হবে।
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
এদিকে, অন্যান্য ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারাও সংস্কার কমিশনের ৫০:৫০ প্রস্তাবের বিরোধিতা করছেন। তাদের দাবি, উপসচিব পদে পদোন্নতি পুরোপুরি পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা আগামী মঙ্গলবার সব সরকারি অফিসে এক ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
২৫ ক্যাডারের ‘বৈষম্য নির্মূল পরিষদের’ নেতা মুহাম্মদ মফিজুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা চাই অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি সম্পূর্ণ যোগ্যতার ভিত্তিতে হোক। এই সরকার কোটা বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। আমরা কোটা নিয়ে আর কোনো আন্দোলন চাই না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অতিরিক্ত সচিব ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৭৫ শতাংশ কোটার পক্ষে আদালতের রায় আছে। সংস্কার কমিশন যদি এই রায়ের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে।’
গত বুধবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ জনমুখী, দক্ষ, নিরপেক্ষ এবং আধুনিক প্রশাসন গঠনের লক্ষ্য পূরণ করবে না।
জেলা প্রশাসকরাও এই প্রতিবাদের পক্ষে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান আশ্বস্ত করেছেন যে, কমিশন সরকারের কাছে যুক্তিসঙ্গত সুপারিশ পেশ করবে। তবে, তার আগে, কারও যেন কোনো বিভ্রান্তি না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আলোচনা করা হবে।